অত্যধিক কাজের চাপে স্ট্রেসের (Stress) শিকার হওয়া খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। মানসিক ও শারীরিক পরিশ্রমের ফলে এই স্ট্রেস দেখা দেয়। অত্যধিক স্ট্রেস ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে স্বাস্থ্যের উপর। হাজার কাজ ঘুরপাক খাচ্ছে মাথায়। সকালে ঘুম থেকে উঠলেই মনে হয় এটা করতে হবে, ওটা করতে হবে। কাজগুলি না হওয়া পর্যন্ত মাথা যেন ভার হয়ে থাকে। হাজার হাজার কাজের চাপ। এটা এখনের মধ্যে, ওটা তখনের মধ্যে করে ফেলতেই হবে। সকালে চোখ খোলার পর থেকেই মাথায় এইসব চিন্তা ঘুরতে থাকে। বাড়তে থাকে মানসিক চাপ। কেন্দ্রের ২০১৯ সালের টাইম আস সমীক্ষা বলছে, ভারতীয়রা প্রতি সপ্তাহে গড়ে ৬১ ঘন্টা কাজ করে। অর্থাৎ, সপ্তাহে পাঁচ দিন কাজ হলে রোজ ১২ ঘন্টা কাজ করতে হয়। সপ্তাহে ছয়দিন কাজ হলেও ১০ ঘন্টা নুন্যতম কাজ থাকে। কাজের চাপ সামলাতে গিয়েই অনেকে মানসিক চাপে ভোগেন।
স্ট্রেস দূর করার উপায়ঃ
- কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিশ্রাম: কাজের ফাঁকে ফাঁকে ঘড়ি ধরে ৫ মিনিট বিশ্রাম নিন। এই সময়টা কাজ সম্পর্কিত কোনওকিছু ভাবা যাবে না। প্রয়োজনে কাজের এলাকা থেকে সরে একেবারে অন্য জায়গায় চলে যান। ফিরে আসুন পাঁচ মিনিট পর। এতে কাজও ভালো হয়, মনও তরতাজা থাকে।
- ডায়েরি রাখুন: একটি ছোট্ট ডায়েরি রাখুন। রোজ রাতে মাত্র ৫ মিনিট সময় দিন ডায়েরিকে। দুটি কলাম করে একটার শিরোনামে লিখুন কাজের নাম, অন্যটির শিরোনামে সময়। দিনের বড় ও গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলি মাথায় না রেখে এতে লিখে রাখুন। অনেকটাই চাপ কমবে এতে।
- সময়মাফিক কাজ: প্রতিটি কাজের জন্য নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ করে ফেলুন ডায়েরিতে। চিন্তা কমাতে প্রত্যেকটি সময়ের সঙ্গে ১৫ মিনিট বেশি সময় যোগ করে রাখুন। কোনো কাজ ২ ঘন্টায় শেষ না হলে পরের ১৫মিনিটটাও ব্যবহার করুন।
- পর্যাপ্ত ঘুম: কাজের যতই চাপ থাকুক না কেন ভালোভাবে ঘুমাতে হবে।এক্ষেত্রে দিনে অন্তত ৭ ঘণ্টা ঘুম চাই।এরথেকে বেশি ঘুমালে ক্ষতি নেই।
- ভালো খাবার খান: মন ও শরীর থেকে কাজের চাপ দূর করতে চাইলে ভালো খাবার খেতে হবে। এক্ষেত্রে এমন খাবার খান যা শরীর ভালো রাখতে পারে। মরশুমি তাজা ফল, শাক, সবজি খান। তবেই ভালো থাকবেন।
- রিল্যাক্স করতে শিখুন: আপনাকে রিল্যাক্স করতে জানতেই হবে। এক্ষেত্রে প্রাণায়াম (Pranayama) হতে পারে আপনার অন্যতম সঙ্গী। এছাড়াও করতে পারেন মাইন্ডফুলনেস (Mindfulness)। দেখবেন মন হালকা হয়েছে।
- নিজের জন্য সময়: অনেকসময় কাজ না থাকলেও কাজের চিন্তা থেকেই যায়। সন্ধ্যে সাতটায় কাজ শেষ হলেও কাজের চিন্তা রাত নটা-দশটা পর্যন্ত মাথায় ঘোরে। এতে মানসিক চাপ বাড়ে। তাই নিজের জন্য সময় রাখা শুরু করুন। পরিবারকে সময় দিন। এতে কাজের চিন্তা মাথায় ভিড় করবে না।